Mobile আসক্তি কমানোর কিছু কার্যকর পরামর্শ!

বর্তমান প্রযুক্তিনির্ভর জীবনে মোবাইল ফোন আমাদের নিত্যসঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহারে মানুষ শুধু মানসিক চাপ বা উদ্বেগই বাড়ায় না, বরং সময়ের অপচয়ও ঘটায়। মোবাইল আসক্তি থেকে মুক্তি পেতে কিছু কার্যকর কৌশল অনুসরণ করা যেতে পারে।


মোবাইল আসক্তি কমানোর কিছু কার্যকর পরামর্শ

 . সময় সীমা নির্ধারণ করা!

মোবাইল আসক্তি কমানোর প্রথম পদক্ষেপ হলো দৈনিক নির্দিষ্ট একটি সময়সীমা নির্ধারণ করা। আপনি ঠিক করতে পারেন, প্রতিদিন কতটা সময় মোবাইল ব্যবহার করবেন এবং কোন সময়গুলোতে তা সম্পূর্ণ এড়িয়ে চলবেন। এই সীমা পেরিয়ে গেলে ফোনটি দূরে রেখে অন্য কোনো কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখার চেষ্টা করুন। অনেক স্মার্টফোনেই আজকাল Screen Time বা Digital Wellbeing Feature থাকে, যার মাধ্যমে আপনি দিনে কত সময় মোবাইল ব্যবহার করছেন তা পর্যবেক্ষণ করতে পারেন।

. অপ্রয়োজনীয় App সরিয়ে ফেলা!

মোবাইলের অনেক App রয়েছে যেগুলো সময়ের অপচয় ঘটায়। যেমন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, Games বা Video streaming অ্যাপগুলো আমাদের সময়ের একটি বড় অংশ কেড়ে নেয়। অপ্রয়োজনীয় অ্যাপগুলো ফোন থেকে সরিয়ে ফেলা কিংবা সাময়িকভাবে Uninstall করলে সময়ের অপচয় কমবে এবং মোবাইল আসক্তি কমবে।

. Notification বন্ধ রাখা!

মোবাইলের ক্রমাগত Notification আমাদের মনোযোগকে বারবার বিভ্রান্ত করে। তাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, ইমেইল বা অন্য যেকোনো অ্যাপের অপ্রয়োজনীয় Notification বন্ধ রাখতে হবে। আপনি যখন কাজ করছেন বা বিশ্রাম নিচ্ছেন, তখন সব Notification বন্ধ রাখলে মনোযোগ বাড়বে এবং মোবাইল আসক্তি কমতে থাকবে।

. রুটিনের মধ্যে ভারসাম্য আনা!

মোবাইল ব্যবহারের একটি রুটিন তৈরি করা জরুরি, যাতে আপনার দৈনন্দিন জীবনে ভারসাম্য বজায় থাকে। সকালে উঠেই ফোন ব্যবহার না করে প্রথমে নিজের যত্ন নেওয়া, ব্যায়াম করা বা বই পড়া গুরুত্বপূর্ণ। কাজের সময় মোবাইল দূরে রেখে কাজ করা এবং প্রয়োজনীয় কাজ শেষে মোবাইল ব্যবহার করা উচিত।

. Social Media ব্যবহার কমানো!

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হলো মোবাইল আসক্তির একটি বড় কারণ। অনেকেই প্রতিনিয়ত Facebook, Instagram, Tiktok এর মতো প্ল্যাটফর্মে ঢুকে যান এবং একটানা সময় পার করেন। Social Media ব্যবহারের সময় কমিয়ে দিন, এবং এই সময়টুকুতে অন্য কোনো সৃজনশীল কাজে মনোযোগ দিন। কিছু App আছে যেগুলো আপনার সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের সময় সীমাবদ্ধ করতে সাহায্য করে।

. Device থেকে বিরতি নেওয়া!

দিনের বিভিন্ন সময়ে ফোন থেকে বিরতি নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে, শোবার আগে মোবাইল ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকা উচিত। মোবাইলের নীল আলো আমাদের ঘুমের মানকে নষ্ট করে এবং মানসিক চাপ বাড়ায়। শোবার আগে অন্তত এক ঘণ্টা আগে মোবাইল বন্ধ করে রাখা উচিত, যাতে ভালো ঘুম হয়।

Mobile এর বদলে  অন্য কাজে মনোযোগ দেওয়া!

মোবাইলের পরিবর্তে নিজের শখের কাজে মনোযোগ দিন। ছবি আঁকা, বই পড়া, সংগীত শোনা, অথবা কোনো শারীরিক কার্যকলাপের সাথে যুক্ত হওয়া মোবাইল আসক্তি কমাতে সহায়ক হতে পারে। এভাবে নিজের সৃজনশীলতা বাড়ানোর পাশাপাশি মোবাইলের ব্যবহারও সীমিত করা যাবে।

. সামাজিক জীবনে মনোযোগ দেওয়া

মোবাইল আসক্তির কারণে আমরা অনেক সময় বাস্তব জীবনের সম্পর্ক থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ি। পরিবার বন্ধুদের সাথে সময় কাটানো, মুখোমুখি আলাপ করা এবং আড্ডা দেওয়া মনকে সতেজ রাখে এবং মোবাইলের ওপর নির্ভরশীলতা কমায়।


মোবাইল ফোন আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অপরিহার্য হলেও এর অপব্যবহার আমাদের মানসিক এবং শারীরিক স্বাস্থ্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। তাই সময় সীমা নির্ধারণ, অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ সরিয়ে ফেলা, নোটিফিকেশন বন্ধ রাখা এবং অন্যান্য কার্যকর কৌশল অনুসরণ করে মোবাইল আসক্তি কমানো সম্ভব।

Comments